ড অশোক মিত্র
(১৯২৮-২০১৮)
কিছু কিছু ছোটসাইজের কবি শিল্পী ক্রমাগত চিমটি কেটে গেলেও, জীবনে এত এত বড় মানুষের সানিধ্য, ভালোবাসা পেয়েছি যে নিজেকে বেশ সৌভাগ্যবান মনে হয়। আমার জীবনে তেমনই এক বটবৃক্ষ এই মানুষটি। আজ তিনি বিপন্ন, অসুস্থ।
এই মানুষটিই প্রথম আমায় আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন আরেক বিরাট মানুষ অশোক সেনের সঙ্গে। আমার এবং আমার লেখার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি 'বারোমাস'-এর বিদগ্ধ সম্পাদককে এত ভালো ভালো কথা বলেছিলেন যে, লজ্জাবনত আমায় সরাসরি অশোকবাবু বলেছিলেন, "আজ থেকে তোমায় প্রতিবছরের শারদীয়া বারোমাসের জন্য লেখা আমন্ত্রণ করছি।" আমার শরীরে শিহরণ তখন। কবি সাহিত্যিকদের কাছে 'বারোমাস'-এর মর্যাদা যে কতখানি, তা নিশ্চয় বলে বোঝাতে হয় না। সেই থেকে অশোকবাবুর মৃত্যু পর্যন্ত প্রতি বছর নিরবচ্ছিন্ন 'বারোমাস'-এ লিখে গেছি। এ আমার জীবনের এক পরম প্রাপ্তি। আর সেই প্রাপ্তির মূলে এই মানুষটি।
নিরহংকার, সদালাপী, জ্ঞানতাপস, ঈশ্বরের মতো নিষ্কলঙ্ক এই মানুষটির চরণস্পর্শে সমৃদ্ধ হয়েছি বহুবার। শেষদিকে উনি আর শুনতে পেতেন না আমার কথা। তাই টেলিফোন করা বন্ধই করে দিয়েছিলাম। দেখা করে লিখে লিখে কথা বলতাম।
তিনি আর নেই আমাদের মধ্যে। মেনে নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
- রজতশুভ্র মজুমদার
No comments:
Post a Comment