আবহমান-৬। ক্রোড়পত্র- হায় রাম। সম্পাদনায় বেবী সাউ, মণিশংকর বিশ্বাস হিন্দোল ভট্টাচার্য

Friday, May 4, 2018

তন্ময় চট্টোপাধ্যায়



চৌকাঠ

ছায়া পড়েছে ফেলে দেওয়া কবিতার। 
এতোটা সহজবোধ্য তুমি প্রথম!
ক্রমশ নরম হতে হতে একতাল মাটি যেমন
আর দেখো আঙুলের ডগায় জন্মাচ্ছে টান
এ লাজ এ ভঙ্গি- নতুন সাদা পাতা। 
শরীরের এক ভাঁজ থেকে অন্যে শুধু সাজাবো শব্দ, উল্টে পাল্টে নেড়ে চেড়ে 
এক এক প্রান্ত হবে আরও তীক্ষ্ণ 
তাতে মিশে যাবে আরও গূঢ় কোন চেতনা। 
তোমার দাওয়ায় এখন আমারই বসে থাকা
মৃদু হাওয়ায় সন্ধ্যে নামবে
আর তোমার দু হাত থেকে ছিনিয়ে নেব  আটকানো বালি,
গা থেকে খুলে নেব লেগে থাকা ঝরা পাতা। 
সরে এসো জানলার দিকে
একটা পরিষ্কার আকাশ চাই ;
বিদ্যুৎ ঝলকানি আর ভালো লাগে না আমার
বৃষ্টির পর সোঁদা গন্ধ - না তাও না,
হাতা খুন্তি আলমারি ওষুধ স্ট্রিপের মাঝেই তোমাকে নতুন সাজিয়ে তোলা। 
পড়ে থাকা পোশাকে যে জোনাকি লেগে আছে তাকে বলো, অন্য সন্ধ্যায়। 
অক্ষরবৃত্ত আর মাত্রাবৃত্তর মধ্যে একটা চাঁদ

ছায়া পড়েছে ছুঁড়ে ফেলা কবিতার। 

এ ভাবনার মোহক্ষণে,
স্বপ্ন বাস্তবের চিরাচরিত প্রথায় উল্লসিত আমি - তোমায় জাপটে ধরতে গিয়ে দেখি শুধু কংক্রিট। 
তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাচ্ছো দেখে ছুটে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ি চৌকাঠে,

যেখানে পড়েছিল সেই কলম আর পুড়ে যাওয়া ছাই...

নৌকা

স্রোতে গা ভাসিয়েছি বহুদিন
শুধু ডুবে ডুবে আঁকড়ে ধরা বিফল শূন্যতা । 
একটা আলো
কাছে গিয়ে দেখি হীরের আংটি 
পাশেই পড়ে আছে ভগ্ন শাঁখ। 
জলজ উদ্ভিদের কান্না নতুন নয় 
মিথ্যে আশা দেখিয়ে সাঁতরে বেড়াচ্ছে জলজ প্রাণী যাদের মুখ বিড়ালের বাকী দেহ মাছের। 
চিৎ হয়ে ভেসে থাকি 
মুখে ওপর টিপটিপ অ্যাসিড বৃষ্টি
ডুবে দেখি প্রবল ঘূর্ণি
খড়কুটো আঁকড়ায় পুরনো মৃতদেহ
শিরায় ঢুকে পড়ছে ঘোলা জল
নিভে যাওয়া মোমবাতি ভেসে থাকে খালি,
যেটুকু সঞ্চয়, শক্তি - নিঃশেষ । 

সাঁতরে গিয়ে দেখি সেই নৌকা আজও
নিশ্চুপ দোলে স্থির জলে অক্লেশ..

No comments:

Post a Comment