আবহমান-৬। ক্রোড়পত্র- হায় রাম। সম্পাদনায় বেবী সাউ, মণিশংকর বিশ্বাস হিন্দোল ভট্টাচার্য

Friday, May 4, 2018

গল্প : সোমতীর্থ নন্দী



-   






                   
                  Want to Whole Lotta Love

-       চলো আগে তোমার সাথে সবার আলাপ করিয়ে দি
-      
সবার সাথে আলাপ মানে? তোমার তো কেউ নেই। আমারও না। সেটাই তো কারণ আমাদের...
-      
এর নাম ব্রুনো
-      
ওরে বাপরে এটা কি জাতের?
-      
ল্যাব্রাডর। আর ওই যে পুঁচকেটা টুক টুক করে আসছে ও ভুতো। পাগ্‌। এসো।
-      
আরও আছে?
-      
তোমার কি কুকুর পছন্দ নয়?
-      
না... তা নয়... আমার কোন অ্যালার্জি বা কিছু নেই। আমার শুধু তোমার মতো আদর পায়না।
-      
সে ঠিক আছে। এই দ্যাখো এ হলো টেরিয়ার। সিম্বা।
-      
হুম
-      
আর এই বাচ্ছাটা ম্যাস্টিফ। কিছুদিন পরেই ও সবার থেকে বড় হয়ে যাবে। ওর নাম ব্লু
-      
বাহ্‌
-      
তোমার কি পছন্দ হচ্ছেনা বিষয়গুলো?
-      
না না পছন্দ হবেনা কেন?
-      
দেখো আমি কুকুর নিয়ে থাকতে ভালোবাসি। আমার সাথে থাকতে হলে ওরাও থাকবে।
-      
হুম। বিনীতা, ভালোবাসা মানে সবটা নিয়ে ভালোবাসা। আমি তো তোমায় ভালোবাসি। তোমার সবটা। কি করা।

আঠাশ বছর পর একদিন

-       বাপের জন্মে এমন দলিলের কথা শুনিনি
-      
তাহলে শুনুন। সিম্পল। আপনাকে এমন ভাবে দলিলটা করতে হবে যাতে আমার এই প্রপার্টি কেউ না পায়। কেউ দখল করতে না পারে। কেউ ইভেন এই কম্পাউন্ডে যেন কোনভাবেই ঢুকতে না পারে। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর এই জমি কোর্টের প্রপার্টি হবে। কোর্ট যা খুশি করতে পারে। উত্তরাধিকারী... কেউ নেই। যদি কেউ ক্লেইম করতে আসে উত্তরাধিকারী হিসেবে তবে তাকে যেন ফ্রড হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়, বা যা খুশি করুন, মোদ্দা কথা সে ফ্রড। এটাও যেন দলিলে পরিষ্কার লেখা থাকে।
-      
আমি আজ তিরিশ বছর উকিলি করছি। আমিও জানিনা এমন দলিল বানানো সম্ভব কিনা।
-      
সেটা আপনার দায়িত্ব। আমার ঠিক যেমন বললাম এমন দলিল চাই। টাকা নিয়ে ভাববেননা। কোর্ট যদি পঞ্চাশ বছর পর এ প্রপার্টি বিক্রি করতে পরে, আপনার ফ্যামিলি সে টাকার অর্ধেক পাবে। বাকিটা, এরিয়া মিউনিসিপালটি পাবে।

প্রথম ঘটনার বছর পাঁচেক পর একদিন

-       উফ উফ উফ উফ, আমাকে এখানে তুলে দাও, উফ উফ এখানে।
-      
হুম। এই নাও আর কি লাগবে বলো।
-      
কিছু না। উফফফ মাগো... পা দুটো তুলে দাও ওই দুটো স্ট্যান্ডে... ও মাগো
-       আমাদের হসপিটালে যাওয়া উচিত। নিদেন... জানিনা এখন ধাই পাওয়া যায় কিনা... মানে এসব আমি জানিই না। আর যা বললে, তারপরেও তোমায় বাঁচিয়ে রেখেছি কেন কে জানে।
-      
আঁআঁআঁআঁহহহ না না পাগল নাকি? ধাই না। আমি জানি কেউ আমার সাথে থাকবেনা... মাগো উফফফ... তুমি থেকো। তুমি পারবে। সহ্য কোরো যাই দেখবে।
-      
হুম সেতো... করেই ফেলি... করেই আসছি এতদিন ধরে। কিন্তু তাই বলে... আমি সত্যি নিতে পারছিনা। তোকে খুন করে ফেলার কথাও মনে হচ্ছে। কিন্তু ওই আমি ভীতু হয়তো। তবে আমি একটা খুন আজকে করবোই।
-      
উফ উফ উফ উফ শোনো, যাই ঘটুক চোখের সামনে, শান্ত থেকো। উফ উফ কর্ডটা কেটো। উফ উফ উফ এখন ওই টাওয়েলটা দাও, মুখে ধরবো।

দ্বিতীয় ঘটনার বছর পঁচিশ মত পরে একদিন

-       আরে ই প্রপার্টিটা কার নামে আছে?
-      
সেটাই তো সমস্যা। এটা কারো নামে নেই। কি জানি কিভাবে এরকম চুক্তি কেউ আপ্রুভ করতে পারে। এটা কোর্টের হাতে আসতেই এখনো মনে হয় পঁচিশ বছর বাকি। তারপরতো বিক্রি।
-      
তো ইটার ভিতরে আছেটা কি?
-      
কেউ জানেনা। মান্থলি ভিসিটে এক অফিসার আসেন, চারপাশটা বাইরে থেকে ঘুরে দেখে চলে যায়।
-      
আররে ইতো অজীব প্রপার্টি আছে। শোনেন আপনি ওই সোরকারী লিস্টের থিকে ই প্রপার্টিটাকে সোরাবার বেবোস্থা কোরেন। অফসারকে হাম দেখে নিচ্ছি। রাউন্ডে আসবে তো? পরশুদিন? তার পরদিন আমরা ইটার ভিতরে দেখব। চোলেন চট কোরে কোরিয়ে ফেলেন এইটা।
-      
কিন্তু লাখোটিয়া স্যর ওই আওয়াজ?
-      
আরে ভিতোরে তো জোঙ্গোল হয়ে আচে। কুত্তা ফুত্তা আচে। কোই জানোয়ার আচে।

প্রথম ঘটনার বছর পাঁচেক পর একদিন

        অদ্ভুত মাথাটা। মুখটা কেমন, কানটা... ছুঁচোলো। কাঁধটা গোল বেশী। হাতগুলো একদম। বুক। কোমর। পা। পা। ইস। আর কি... দেখছিই তো বসে বসে। ও য়ুমবিলিকাল কর্ড। ছুরি। কাটতে হবে। বিনীতা কাতরাচ্ছে। ফেটিশে ভরা মাগী। শান্ত। শান্ত। একে কি নাম দেওয়া হবে? কি করে রাখা হবে? পাঁচিলটা উঁচু করে দিলে ভালো। চট করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবেনা। কিন্তু কি খাবে? জল? জল? কি? ও বিনীতা জল চাইছে। হ্যাঁ জল। তবে কি একটা সেলার মতো কিছু করে ফেলা যায়? বাড়ির তলায় লুকোনো? কিন্তু বড়ো হলে কি হবে? দাঁতটা দেখি? দাঁত কই? আরে দাঁত কেন থাকবে বাল, বাচ্চা তো আফটার অল। হ্যাঁ কিন্তু দুধ খাবে? কিভাবে খাবে? এসব কি হচ্ছে? আরে কি? কি? কি? কি? গলাটা এখানে চিপে ধরলে এক্ষুনি মরে যাবে। চাপ দিতে হবেনা বেশি। দু হাত ও লাগবে না। বিনীতা? বিনীতা তো ভালোবাসছে। বাসবেই। ওর নিজস্ব ফেটিশ। পেটে ধরেছে। ছেলে না মেয়ে? দেখি? মেয়ে নাতো? না। না। যাক বাবা। বাঁচা গেছে। একে লাগানোর সুযোগ দেওয়া যাবেনা। কাটাতে হবে। এ সব কাটাতে হবে। পুরোটা আটকে ফেলতে হবে। আচ্ছা এর সায়েন্টিফিক নাম কি হতে পারে? আরে বাল আমার নিজের কি হবে? কিন্তু এটা সম্ভব কি করে? জিনপুল কি করে ম্যাচ করলো? ও মাই গড। এসব কেন? কেন? দেখতে চাই বলে এতো দেখতে হচ্ছে কেন মাগো। গলাটা টিপে দিই। এই যে... ম্যাস্টিফ। ব্লু। বোকাচোদা। গুদ মেরে বাচ্চা পয়দা করেছিস দেখ। আজ শালার একেই মেরে ফেলব। সেটাই ঠিক। বাচ্চার পয়দা দেখিয়ে বাপকে মারব। কই শালা? ছুরি? না না ধুর বাল। হাতুড়ি? কুড়াল। ঠিক। প্রথম কোপটা কোমরে। বিচিটা গেলে দেব। পরেরটা ঘাড়ে গলায়। গ্যারেজটায় যাই। বাচ্চাটাকে কি রাখব? রাখি। দেখি না কি হয়। তলায় একটা আন্ডারগ্রাউন্ড বানিয়ে রাখিবড়ো হোক খানিক। আটকে রাখব। বড়ো হলে দেখি কি হয়েছে। একটা লাইসেন্স যোগাড় করা যায়না? বন্দুকের? ধুত। ও সব থাক। তলার ঘরেই রেখে দেব। না খেতে পেয়ে মরবে। আচ্ছা, মা আর ছেলে কে একসাথে রেখে দিলে কি না খেতে পেয়ে ছেলে নিজের মা কেই খেয়ে নেবে? মাংশাসী নিশ্চই। নাকি মা কে খাওয়ানোর জন্যে খাবার যোগাড় করবে? বাল করবে। রি-ইনফোর্সড স্টিলের দরজা বানাবো বাল। আন্ডারগ্রাউন্ড সেল। একদম। তারপর মরার আগে মা ছেলে কে এখানে গুঁজে দেবো। একদম।

চতুর্থ ঘটনার হপ্তাদুয়েক পর।

আমাদের আলোচ্য প্রপার্টি এখন চুপ। উঁচু পাঁচিলের এক দিক ভাঙা। লাখোটিয়া দলবল নিয়ে ঢুকেছিলো, সাতল্লিশ বছর আগে ব্যাঙ্ক ভল্ট এর মতো করে বানানো সেলারের স্টিল দরজাটা দেখে লোভে চকচকও করে উঠেছিল লাখোটিয়ার চোখ, সবাই এখনও সেলারেই আছেন, ছিন্নভিন্ন, পচেও উঠেছে অবশ্যই, যেটুকু বাকি আছে ওদের, রিইনফোর্সড স্টিলের দরজা বন্ধ। পিনাই বেরিয়েছে সেখান থেকে, তাও প্রায় দেড় সপ্তাহ। কোনদিন বাইরে বলে কিছু দেখেনি ও। সেগুলোর সম্পর্কে কোন ধারনা নেই ওর। ও অন্ধকার চেনে, মা কে চেনে, মায়ের স্বাদ জানে। আকার, গন্ধ, তা ছাড়া কিছু সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই ওর। আলো চেনেই না প্রায়, কিছুদিন অভ্যেস ছিল, একটা আলো জ্বলে উঠলে ওর কাছে খাবার আসত, অনেক ছোটবেলায়, এক দু বার... বাইরেটা দেখেছিল হয়তোবা, মনে পড়েনা ছোটবেলায়... স্মৃতির ধারনা নেই, লুকোতে হবে বোঝে, রাতে চলে।
বহুদূর, ভুরুডিহি বলে একটা হারিয়ে যাওয়া গ্রামে, এক গ্রীষ্মের ঠাঠাপোড়া দুপুরে, যখন পিনাই প্রায় অন্ধই বলা চলে, গ্রামবাসীদের চোখে পড়ে পিশাচের মত দেখতে একটা কিছু, নির্জনে একটা টিলার ধারে পাথর জমে তৈরী আড়ালে, আশেপাশের তিনটে গ্রাম মিলিয়ে ধরলে হারিয়ে যাওয়া পঞ্চম মেয়েটিকে চিবিয়ে খাচ্চিলো যে সময়ে, তখন। তারা পিটিয়ে মারতে পারছিলোনা তাকে, তারা বুঝতে পারছিলো না, শাবল, দিয়ে মাথা ফাঁক করে দেওয়ার পরেও মাথা জোড়া লেগে গিয়ে, কি করে প্রাণীটা আবার উঠে দাঁড়াচ্ছে, মাথায় একটা শাবল গেঁথে রাখা অবস্থাতেও। প্রায় পাঁচদিন ধরে ক্রমে যখন কাজের ফাঁকে একবার করে একে মেরে আসা গ্রামবাসীদের একটা খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রায় অন্ধ বুড়ো গোদিন্দকাকা বহু প্রাচীন হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি ঘেঁটে তাদের বললো, এর মাথা কেটে আলাদা করে মাঝে একটা লোহা জাতীয় কিছু রাখতে হবে ও পুড়িয়ে ফেলতে হবে, তখন তাদের খেলা শেষ হলো। কিন্তু আটচল্লিশ বছর বয়সী এই প্রাণীটাকে পোড়ানো গেলনা। তার গলা কেটে মাঝে একটা কোদাল রেখে কাঠ যোগাড়ে ব্যস্ত লোকেদের এসে ছেলেরা খবর দিল, প্রানীটি বেগুনি ফুল হয়ে গেছে, এবং তারা এসে অবাক হয়ে দেখল, তাদের রেখে যাওয়া কোদালের ফলাটি উঁচু হয়ে আছে, বেগুনি ফুলে ভরা ছোট ছোট ঝোপের মাঝে। ঝোপের আকৃতি ঠিক যেন সেই পিশাচটি। সে ফুলের ছোপধরা ছোট্ট জায়গায় তারা দুমিনিটের মধ্যেই আগুন জ্বেলে দিলো, ও অবাক করা বেগুনি আগুনে, গত কয়েকদিন ধরে ঘটে যাওয়া আশ্চর্য্য অজানা পৃথিবীর গল্প করতে করতে ঘরে ফিরে গেল। স্বাভাবিকভাবেই সে গল্প ক্রমে হয়ে উঠল এক অবিশ্বাস্য উপকথা।

এপিলোগ

 - ঘুররর ঘঁক, ঘোঁওওওঔক
-
হুমম। ক্ষিদে পেয়েছে তোর? এই নে, এখান থেকে একটু ছিঁড়ে নে।
-
গুঁইইইইই, গুঁ, ঘৌক
-
হ্যাঁরে, হলো তো, হলোতো এত বছর এভাবে, তোর কি এই এতদিন ধরে এক কথা বলে যেতে ভালো লাগে? আমি যা করেছি, তার ফল তোকে নিয়ে ভুগছি। আর ফল হয়েছে যে তোকে আমি আমার ক্ষমতা দিতে পারিনি আর... আমার ক্ষমতাও শেষ হয়ে আসছে... আসলে এত ডিপ্রেশন... বেরোতেই পারিনা... হয়তো সে জন্যেই। আনন্দ না থাকলে পচে যাবোই। পচে ওঠে তোর কামড়গুলো আজকাল। ভরতে চায় না সহজে। ঠিক আছে, এখনও চলবে কিছুদিন। কিন্তু তারপর তোর কি হবে পিনাই? তুই তো ব্লু এর মত বুদ্ধিও রাখিসনা...
বলতে বলতে হঠাৎ সোজা হয়ে বসে বিনীতা। এই জায়গার নামে কোথাও কিছু আলোচনা হচ্ছে। কেউ এখানে ঢুকতে চাইছে। মনে হচ্ছে তিন চার দিনের মধ্যেই। চঞ্চল হয়ে উঠলো বিনীতা। শেষ একশোখানেক বছর ও বন্ধ করে রেখেছিল নিজের এই ক্ষমতাটা। অনেকগুলো ক্ষমতার মধ্যে এটা। এই নির্দিষ্ট জায়গাটার জন্য রেসপন্স খোলা রেখেছিলো শুধু...  কতদিন সে এখানে? চল্লিশ? পঁইয়তাল্লিশ বছর? আরও বেশিই হবে। বিনীতা মনেও করতে চায়না। ভাবতে চায়না। ধ্রুবর সাথে থাকার বছর তিন চার পরের এক দিন থেকে, যেদিন সে প্রথম বলেছিল ধ্রুব-কে, যে এই সন্তানটি আসলে ধ্রুবর নয়, ব্লু এর। ঘেন্না করতে শুরু করেছিল ধ্রুব ওকে। ভাবনার ভারসাম্য চলে গেছিলো আশ্চর্য্য শান্ত ধ্রুবর। বিনীতা তো কোনওদিন বলতে পারেনি ধ্রুবকে যে আসলে সে কে। বুঝতোও না ধ্রুব। সম্ভব না। ওর প্রসবের দিন, মাথার প্রায় মাঝে কুড়ালের এক কোপে ব্লু কে মেরে ফেলেছিলো ধ্রুব। ব্লু তখন শুয়ে ছিল, বিছানাটার সামনে, পা ছড়িয়ে, কেমন এক দৃষ্টে ওর দিকে দেখছিল ব্লু। ওর দিকে না ওর কোলে থাকা পিনাইএর দিকে, তা বিনীতা আজও মনে করতে পারেনা। দিব্যি চলছিল। ও তো আর ফিরে যেতে চায়না পৃথিবীর এই প্রানীগুলোর কাছে। নিজেকেই প্রশ্ন করতে থাকে বিনীতা, কী চায় ও? পৃথিবীর প্রায় সমস্ত রকম প্রাণীর সাথে নিজেকে মিশিয়ে সৃষ্টি করে দেখা হয়ে গেছে। কম দিনতো নয় ও পৃথিবীতে। কিন্তু তিন চার দিনের মধ্যে কেউ এখানে ঢুকবে।
বিনীতা এই আন্ডারগ্রাউন্ড মেনে নিয়েছিলো। এখানেই ও পিনাই কে নিয়ে থাকত, ধ্রুব এসে খাবার দিয়ে যেত। ওই একবারই মানুষের মুখ দেখতে পেত ও শেষকটা বছরে। শান্ত ধ্রুবর মুখে অপ্রকৃতস্থ হাসি দেখলে বুঝত, সেদিন খাবার হিসেবে ওকে আর পিনাই কে কাঁচা কুকুরের মাংস দেওয়া হয়েছে, যেন কুকুরের মাংস যোগাড় করতে পেরে ধ্রুব খুবই আনন্দিত। হঠাৎই একদিন থেকে রিইনফোর্সড স্টিলের মোটা দরজাটা আর খুললোনা। ধ্রুবর ভাবনার অস্তিত্ব আর টের পেলনা বিনীতা। সেও কতবছর হয়ে গেছে। ওর কিছু হয়না। মরে যায়না ও। ওর বিভিন্ন প্রকৃতির সাথে নিজেকে মেলানোর এই অভ্যেস শেষ পঞ্চাশ বছরে ওকে ধ্রুবর কাছে এনেছিল, Rhnull রক্ত ছিলো ধ্রুবর। আগে দেখা হয়নি এটা ওর। কিন্তু বুঝতে ওর বেশী সময় লাগেনি, যে এ আলাদা কিছু নয়। একই। আস্তে আস্তে ওর নজর পড়ে বুদ্ধিদীপ্ত, পেশীবহুল ব্লু-এর ওপর।
পিনাইএর মধ্যে তার ক্ষমতা কিছু এসছে, কিছু আসেনি। যেমন ও না খেয়ে আছে এই এত বছর, শরীরটা এখন শুধু প্রচন্ড পালাতে চাওয়া, অথচ শেষ না হওয়া একটা আধার ওর কাছে। পিনাই তা নয়। পিনাইকে প্রতিদিন নিজের মাংস ছিঁড়ে নিতে বলে বিনীতা (মানে এবার বিনীতা ছেড়ে দিন, সেটা তো আর ওর নাম নয়)। ব্যথা লাগে। ঠিক আছে। আগে ভরে যেতে ঘন্টা দুয়েক লাগত। এখন প্রায় দু দিন। কিন্তু তিন চারদিনের মধ্যে কেউ এখানে ঢুকবে।
- পিনাই, শোনো। সামনের চারদিনের মধ্যে তুমি আমাকে পুরো খেয়ে ফেলবে। একটুও যেন না থাকে। আমি হাড়ও নরম করে দেবো শেষ দিন। মাথাটা সবার পরে খাবে। ঠিক আছে? তারপর দেখো কি হয়। দেখো কতদিন বেঁচে থাকতে পারো বাইরে। আমি, আমার কাজে ফেল করেছি। তুমি সে নও, যাকে আমি চেয়েছিলাম। নাও ডান হাতের এখান থেকে খাও।

No comments:

Post a Comment