Saturday, May 5, 2018

রামায়ণী কথা : জয়ন্ত ভট্টাচার্য




রামায়ণী কথা


আমরা বেশ আতান্তরে আছি। ঐ যেখানে বিধর্মী মুসলিমরা “রামের মন্দির” ভেঙ্গে বাবরি মসজিদ তৈরি করেছিল সেখানে আবার নাকি “যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানি” ঘোচানোর জন্য রাম মন্দির তৈরি হবে। এতে collateral damage হিসেবে সংখ্যার দিক থেকে কয়েক হাজার মারতে পারলে তবে যে একজন হিরো তথা বীর হয়ে ওঠে এতো আমরা জানিই। সেই কবে ১৭৫৯ সালে বেইলবি পর্টিয়াস লিখেছিলেন Death : A Poetical Essay সেখানে কেমন জোরগলায় লন্ডনেরএই বিশপ ভদ্রলোক বেমালুম বলে দিলেন –
One murder made a villain,
Millions a hero. Princes were privileged
To kill, and numbers sanctified the crime.
এরপরে আমাদের চ্যাপলিন “মঁসিয়ে ভার্দু”-তে একথাগুলোর সাথে বিচারের সময়ে ভার্দুর বয়ানে বলিয়ে দিলেন - As for being a mass killer, does not the world encourage it? Is it not building weapons of destruction for the sole purpose of mass killing?
তাহলে ব্যাপারটা বেশ সরল হয়ে গেল, “এখন সবই শান্ত এবং ভাল”। “পেটের কাছে উঁচিয়ে আছ ছুরি” বলেইতো কেমন “স্বাধীনমতো ঘুরি”! Collateral damage নিয়ে এরপরে আর বিশেষ কোন সমস্যা রইলনা।
কিন্তু বেশ একটা ঘোটালা রয়ে গেল মিথ তথা কল্পকাহিনী, মহাকাব্য তথা এপিক আর ইতিহাসের গতায়াত নিয়ে। কিভাবে এরা তৈরি হয়, কিভাবেইবা ছড়িয়ে পড়ে, জারিয়ে যায়। কিভাবেইবা খোদ রাষ্ট্র এসে বলে “এই লভিনু সঙ্গ তব” তাই আমি সুন্দর কল্পকাহিনী আর ইতিহাসকে মিলিয়ে মিশিয়ে উল্টেপাল্টে দিতে পারি বিলক্ষণ। তারপরেও, রাষ্ট্র হিসেবে, পর্টিয়াস আর চ্যাপলিন যেমনটি বলেছেন আমরা ক্রমাগত “বীর” সন্তানদের জন্ম দিই প্রতি বীরের জন্য হাজার আর লাখ ঝরতি-পড়তি মানুষের মৃত্যুর নিয়ম মেনে।
যেন পর্টিয়াস আর চ্যাপলিনের কথাকে সত্যি করে ভারতসন্ধানী অধ্যাপক শেল্ডন পোলক তাঁর গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ “Ramayana and Political Imagination in India” শুরু করছেন মৃত্যুর খতিয়ান দিয়ে, এবং সে সংখ্যা হাজারে – “ডিসেম্বর ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩-এর জানুয়ারি পর্যন্ত ৩০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়, সুরাট থেকে কলকাতা, কানপুর থেকে বাঙ্গালোর।” এরকম অবস্থায় এসে অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ একটা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। একাদশ খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর রচিত সুবিশাল “বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত”-র ২০০৮ সালের সংস্করণে বলছেন (স্মরণে রাখবো এর আগেই বীর রাম-সেনানীর দল বিধর্মীর সৃষ্টি মসজিদের স্থাপত্য ভেঙ্গে ইঁটের টুকরো নিয়ে দাঁড়ানো বিশ্বজয়ীর আত্মপ্রসাদের হাসির ছবি আমরা দেখেছি!) – “ভক্তির সঙ্গে যুক্তির কদাপি সহাবস্থান হতে পারে না। ইতিহাসের সঙ্গে গল্প-আখ্যানের সব সময়ে ঐক্যমত্য হয় না। রামায়ণ নিয়ে যে বিতর্ক ও বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে তার মূলে আছে চিরাভ্যস্ত সংস্কার ও যুক্তিপন্থী সিদ্ধান্তের বিরোধ – প্রায়শই একের সঙ্গে অপরের দ্বৈরথ শুরু হয়ে যায়। একালে এই দ্বন্দ্বসংঘাত যে উগ্র রাজনৈতিক উত্তাপ সৃষ্টি করেছে তার ফলে রাম সমস্যার শীঘ্র সমাধান হওয়া দুরূহ। রবীন্দ্রনাথের “কবি তব মনোভূমি রামের জন্মস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো” – একথার উপরে গুরুত্ব দিলে পাড়ায় পাড়ায় শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা আছে।” (১ম খণ্ড, পৃঃ ৩৫১)
ভারতে এবং ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে রামায়ণের বিভিন্ন রূপ, ব্যপ্তি এবং সামাজিক প্রভাব থেকে বোঝা যায় কোন একটি টেক্সট হিসেবে এর তুল্য আর কোন সাহিত্য ভারত ভুখণ্ডে রচিত হয়নি। এ কে রামানুজন তাঁর Three Hundred Ramayanas : Five Examples and Three Thoughts on Translation প্রবন্ধে দেখিয়েছেন বাংলা, তিব্বতি, থাই, বালি ইত্যাদি মোট ২২টি ভাষায় রামায়ণের বিভিন্ন চেহারা দেখা যায়। একে রামানুজন telling বলেছেন। কেন? কারণ হিসেবে তিনি জানাচ্ছেন - I have come to prefer the word tellings to the usual terms versions or variants because the latter terms can and typically do imply that there is an invariant, an original or Ur -text—usually Valmiki's Sanskrit Ramayana , the earliest and most prestigious of them all. But as we shall see, it is not always Valmiki's narrative that is carried from one language to another.
কবে রচিত হল বাল্মীকির রামায়ণ? অনুমান করা হয়, যেমনটি রমিলা থাপার মনে করেন (The Penguin History of Early India : From the Origins to AD 1300, পৃঃ ৯৮), ৭টি কাণ্ডে ২৪,০০০ শ্লোক নিয়ে (প্রধানত অনুষ্টুপ ছন্দে) রামায়ণ কাব্য হিসেবে ছন্দোবদ্ধ হয় খৃষ্টপূর্ব ১ম শতাব্দীর প্রথম ভাগে। মধ্য-গাঙ্গেয় সমতল ভূমি এবং বিন্ধ্যপর্বতের অরণ্য অঞ্চলকে এই মহাকাব্যের পটভূমি হিসেবে রাখা হয়েছে। থাপারের অনুমান (অন্য গবেষকদেরও একইরকম অনুমান) রামায়ণ বাল্মীকির হাতে সূত্রবদ্ধ হবার কয়েক’শ বছর আগে চারণ কবিদের গীতিমালার মধ্যে ছিল, তারা এ গান এক অঞ্চল থেকে অঞ্চলান্তরে গেয়ে বেড়াত। ওয়েন্ডি ডনিগারের ধারণায় রামায়ণ এবং মহাভারত “were probably composed and performed first in the interstices between engagements on a battleground, to an audience that probably consisted largely of Kshatriyas and miscellaneous camp followers. The first bards who recited it were a caste called Charioteers (Sutas), probably but not certainly related to the chariot drivers who appears frequently in narratives...” (The Hindus : An Alternative History, 2009)
এসমস্ত চারণকবিরা এবং রথচালক বা সূত সম্প্রদায় সেসময়ে সামাজিকভাবে নীচুতলার মানুষ, গ্রাম-গ্রামান্তরে এধরনের গীতিকাব্য গাওয়া এবং অভিনয় করে দেখানোই পেশা (নেশাও বটে) ছিল। যখন বাল্মীকির মতো সামাজিকভাবে ঊচ্চবর্গের মানুষের হাতে নতুন লিখিত চেহারা পেল সমগ্র কাব্যের চরিত্র মূল থেকে বদলে যেতে শুরু করল। প্রসঙ্গত বলার যে মহাকব্যের রচনার সময় বা মাধ্যমের মধ্য দিয়ে বেদের “শ্রুতি” চরিত্র “স্মৃতি”-তে রূপান্তরিত হল। ছন্দোবদ্ধ কবিতা স্মৃতিতে ধরে রাখার পক্ষে সুবিধেজনক যাকে বলে mnemonic verses কাব্যের মাঝে ব্রাহ্মণ্যত্বের উপাদান প্রাধান্যকারী হয়ে উঠলো।
আরো কিছু উপাদান প্রবেশ করলো রামায়ণের টেক্সটে –
(১) ব্রাহ্মণের সুউচ্চ অবস্থানের বিপরীতে একটি “অপর”-এর পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন। এ বিষয়টি মহাভারতে এত সফল্ভাবে হয়নি। কারণ দুটি সমবংশজাত ও সম-কুলগরিমাসম্পন্ন পরিবারের মাঝে যুদ্ধ বিবৃত হয়েছে কাব্যে সেখানে হিংসা-প্রতিহিংসার হাজারো উদাহরণ থাকবে, কিন্তু একজন আরেকজনের other বা অপর হিসেবে পাঠকের মনে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা পাবেনা। এখানে রাবণ একজন অনার্য্য, এবং কদাচারি। শুধু তাই নয়, রামায়ণের শুরুতে বাল্মীকি যখন বলেন –

মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতীঃ সমাঃ।
যৎ ক্রৌঞ্চমিথুনাদেকমবধীঃ কামমোহিতম্।।
পাদবদ্ধোক্ষরসমস্-তন্ত্রীলয়-সমন্বিতঃ।
শোকার্তস্য প্রবৃত্তো মে শ্লোকো ভবতু নান্যথা।।

এখাণে শোক থেকে শ্লোকের উৎপত্তি হলেও নিষাদ বা নীচকুলজাত ব্যাধও হচ্ছে অপর, যে নির্দ্বধায় প্রাণী হত্যা করতে পারে। কাব্যের মূল সুরটি এই ক্ষণেই বাঁধা হয়ে গেল।

(২) ব্রাহ্মণের বা ব্রাহ্মণ্যত্বের প্রয়োজনে অপর-কে আত্মীভূত করে নেওয়া যায় এবং সেক্ষেত্রে সংস্কৃত ভাষা হয়ে উঠবে এর একমাত্র মাধ্যম। এক অর্থে ভাষার সংস্কৃতায়ন শুরু হল সফল্ভাবে। শেল্ডন পোলক তাঁর The Language of the Gods in the World of Men (2006) গ্রন্থে একথাটিই সুনির্দিষ্টভাবে জানাচ্ছেন – It is significant that the richly associative term sakta as an adjective qualifying speech or language (sakta vag) occurs for the first time in the Vālmīki Rāmāyāṇa, a work of the last centuries before the Common Era. (পৃঃ ৪৪) ভাষা-সংক্রান্ত একটি ভালো উদাহরণ রয়েছে রামায়ণে। সুন্দরকাণ্ডে হনুমান যখন লঙ্কায় প্রথম সীতাকে আবিষ্কার করে তখন তার মনে চিন্তা এলো – “আমি যদি ব্রাহ্মণদের মতো সংস্কৃতে কথা বলি তাহলে সীতা আমাকে রাবণ ভেবে ভয় পেয়ে যাবে। কিভাবে একজন বাঁদর এ ভাষা বলতে পারে? আমাকে মনুষ্যভাষায় অর্থপূর্ণ শব্দ বলতে হবে যাতে সীতা বুঝতে পারে। (সুন্দরকাণ্ড, ৩০.১৮-১৯) এখানে আমরা নিশ্চয়ই “সংস্কৃত” এবং “মনুষ্যভাষা”-র মধ্যেকার পার্থক্য লক্ষ্য করবো। এটাও লক্ষ্য করবো কোনধরনের জনসম্প্রদায় কিধরনের ভাষা ব্যবহার করে।
এখানে সুনীতিকমারের মত অভিধানযোগ্য – “যে-সমস্ত দেশে ভারত-ধর্মের অর্থাৎ ব্রাহ্মণ্যধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের প্রচার হইয়াছে, সেই-সমস্ত দেশে রামায়ণ মহাভারত ও নানা পৌরাণিক উপাখ্যানও পঁহুছিয়াছে – তবে ব্রাহ্মণ্যের প্রতিষ্ঠার উপর-ই এই সব দেশে রামায়ণ মহাভারত ও পুরাণের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে।” (সাংস্কৃতিকী, আনন্দ ২০১৭, পৃঃ ২৪) সুনীতিকুমারের ব্যাখ্যায় স্পষ্টতই রামায়ণের প্রসারের সাথে ব্রাহ্মণ্যের প্রতিষ্ঠার সরল যোগসূত্র অনুধাবন করা গেল। একই লেখায় তিনি বলছেন – “ভারতের হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের সহৃদয় সাহিত্য-রসিক ব্যক্তিগণের চেষ্টায় রামায়ণের একাধিক অনুবাদ বা রূপায়ণ ফারসী ভাষাতেও হইয়াছে।”

(৩) রাজধর্মের সাথে গার্হস্থ্য ধর্মের এক সুসমঞ্জস সমতাবিধান করা যায় রামায়ণের ভাষ্যের মধ্য দিয়ে। এখানে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করা যায়। দীনেশচন্দ্র সেনের “রামায়ণী কথা”-র ভূমিকায় লিখলেন – “গৃহ ও গৃহধর্ম যে ভারতবর্ষের পক্ষে কতখানি, ইহা হইতে তাহা বোঝা যাইবে। আমাদের দেশে গার্হস্থ্য আশ্রমের যে অত্যন্ত উচ্চস্থান ছিল, এই কাব্য তাহা সপ্রমাণ করিতেছে। গৃহাশ্রম আমাদের নিজের সুখের জন্য, সুবিধার জন্য ছিল না; গৃহাশ্রম সমস্ত সমাজকে ধারণ করিয়া রাখিত ও মানুষকে যথার্থভাবে মানুষ করিয়া তুলিত। গৃহাশ্রম ভারতবর্ষীয় আর্যসমাজের ভিত্তি। রামায়ণ সেই গৃহাশ্রমের কাব্য। এই গৃহাশ্রম-ধর্মকেই রামায়ণ বিসদৃশ অবস্থার মধ্যে ফেলিয়া বনবাসদুঃখের মধ্যে বিশেষ গৌরব দান করিয়াছে
সুনীতিকুমার “সত্যনিষ্ঠা, পিতৃভক্তি, পাতিব্রত্য, পত্নীপ্রেম, সৌভ্রাত্র, প্রভুভক্তি, আশ্রিত-রক্ষা” প্রভৃতি গুণগুলিকে সমাজ ও পরিবারের ভারসাম্যরক্ষাকারী ঊপাদান হিসেবে দেখেছেন। তিনি এ ব্যাপারেও সতর্ক করছেন যে “অন্যদিকে রামের কতকগুলি আচরণে বা কার্যে আধুনিক মানুষ সহমত হইতে পারিবেনা; যেমন বালি-বধ, সীতার বনবাস ও শম্বুক-বধ।” (সাংস্কৃতিকী, পৃঃ ৩১)
এরপরেও দু-একটি ঘটনা থেকে যায় যা আদর্শ পরিবার বা ন্যায়ের শাসনের ধারণার সাথে ঠিক খাপ খায়না। অযোধ্যাকাণ্ডে ২১তম সর্গে লক্ষ্মণ বলছেন – “কৈকেয়ীর কুপ্ররোচনায় আমাদের বাবা যদি কোন অসদুদ্দেশ্য থেকে আমাদের সাথে শ্ত্রুর মতো আচরণ করেন তাহলে আমি তাঁকে কারারুদ্ধ করব কিংবা যদি প্রয়োজন পড়ে হত্যা করব।” (২১.১৩) একথাও বলছেন লক্ষ্মণ – “যদি উদ্ধত হয়ে ওঠে তাহলে একজন শ্রদ্ধাবান পুরুষকেও শাস্তি দিতে হবে।” (২১.১৪)
এগুলোকে মহাকাব্য হজম করলো কি করে? প্রবীণ ফরাসি গবেষক Charles Malamoud একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন – “What place then, in the perspective of dharma, does vengeance occupy?” তাঁর ব্যাখ্যায় রাজধর্ম যেকোন সংকটের মীমাংসা করতে পারে – “When a norm is invoked, it is always that of dharma; and it is a basic principle of dharma to reserve, for the king, the privilege of inflicting punishment.” (Cooking the World : Ritual & Thought in Ancient India, 1998, pp. 159-160)
এরপরেও রবীন্দ্রনাথই আবার সমাধানসূত্র বাতলে দেন – “যাঁহারা পরিপূর্ণ পরিণামের মধ্যে সমস্ত খণ্ডতার সুষমাসমস্ত বিরোধের শান্তিউপলব্ধি করিবার জন্য সাধনা করিয়াছেন, তাঁহাদেরও ঋণ কোনো কালে পরিশোধ হইবার নহে। তাঁহাদের পরিচয় বিলুপ্ত হইলে, তাঁহাদের উপদেশ বিস্মৃত হইল মানবসভ্যতা আপন ধূলিধূমসমাকীর্ণ কারখানাঘরের জনতা-মধ্যে নিশ্বাসকলুষিত বদ্ধ আকাশে পলে পলে পীড়িত হইয়া কৃশ হইয়া মরিতে থাকিবে। রামায়ণ সেই অখণ্ড-অমৃত-পিপাসুদেরই চিরপরিচয় বহন করিতেছে ইহাতে যে সৌভ্রাত্র, যে সত্যপরতা, যে পাতিব্রত্য, যে প্রভুভক্তি বর্ণিত হইয়াছে, তাহার প্রতি যদি সরল শ্রদ্ধা অন্তরের ভক্তি রক্ষা করিতে পারি তবে আমাদের কারখানাঘরের বাতায়ন-মধ্যে মহাসমুদ্রের নির্মল বায়ু প্রবেশের পথ পাইবে।”
আধুনিক তত্ত্ব আলোচনার পরিভাষায় সমস্ত ধরণের subversion, irruption বা schitz-কে ভারতীয় কল্পিত রমণীয়তার এবং সৌভ্রাত্রের মেদুরতায় মুড়ে দেওয়া হল। রাজধর্ম, সমাজধর্ম, গার্হস্থ্যধর্ম সমস্ত কিছু একসাথে রক্ষিত হল। সবাই একসাথে সহবাসও করতে পারে। (আলোচনার পরিসর মাথায় রেখে আমি জেন্ডার বা নারীর প্রশ্ন আলোচনায় আনলাম না।)

(৪) ভিন্নধর্মী মতামত যে রয়েছে কাব্যে তার প্রমাণ মিললেও সেসব বিরুদ্ধ ধারণা ও মতকে রামের বিপুল ছায়া দিয়ে গিলে ফেলা হয়েছে। দু-একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। অযোধ্যা কাণ্ড-তে জাবালি বলে এক ব্রাহ্মণের উল্লেখ পাই, যিনি দশরথের মন্ত্রী আবার নাস্তিক ছিলেন। ১০৮তম সর্গে জাবালি ব্রাহ্মণত্ব ও দৈবমহিমার পর্দা সরিয়ে রামকে বলেন – “পিতা তো কেবলমাত্র একটি অস্তিত্বের বীজ। শুক্রাণু ও ডিম্বানু সঠিক সময়ে মেশে যাতে এক মানবক জন্ম নেয় এই পৃথিবীতে।” (১০৮.১১) এরকম একটি স্বরও রয়ে যায় রামায়ণে। কিন্ত জনসমাজে পৌঁছয়না। এরপরেই জাবালি বলছেন – “এসমস্ত লোকেরা (ব্রাহ্মণদের ব্যাপারে বলছেন) বলে থাকে ‘অষ্টম দিনে আমাদের পিতৃপুরুষের আত্মার স্বস্তিবিধানের জন্য দান-ধ্যান করতে হয়’। খাদ্যের অপচয় দেখো। একজন মৃত মানুষ কিভাবে খাবে?” (১০৮.১৪) আরেকজায়গায় রামকে বলছেন – “হে প্রজ্ঞাবান পুরুষ! এজন্য এই সিদ্ধান্তে এসো যে এই বিশ্বের বাইরে আর কিছু নেই। আমাদের চোখ যা দেখে তাকে গুরুত্ব দাও, আমাদের জ্ঞানের সীমার বাইরে যা অবস্থান করে তাকে প্রত্যাখ্যান করো।” (১০৮.১৭)
আরেকটি নজরে আসার মতো তথ্য হল প্রাচীন রচনা লঙ্কাবতার-এ রয়েছে রাবণ স্বয়ং বুদ্ধকে প্রশ্ন করছেন – “আপনি কি করে বলবেন যে আপনার তথাগতগর্ভ নীতি এবং আমাদের আত্মসংক্রান্ত ধারণা একই ….. কারণ ধর্মদ্রোহীরাও (heretics) আত্মসংক্রান্ত ধারণাকে বিবেচনা করে?” (S.N. Dasgupta, A History of Indian Philosophy, vol. 1, 2004, p. 147) এখানে আমাদের বলার কথা একটাই যে রামায়ণকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কাব্যে অনেকসময়েই রাবণের চিত্রায়ন হয়েছে একজন প্রজ্ঞাবান, দর্শনচর্চায় লিপ্ত মানুষ হিসেবে। ব্যাশাম জানান যে “থেরাবাদ-অনুগামী বৌদ্ধদের জাতক-কাহিনীতে রামায়ণের ঘটনা যে ভাবে উল্লিখিত আছে তাতে সীতাহরণের ও রাক্ষসদের সঙ্গে যুদ্ধের কোন প্রসংগ নেই।” (এ এল ব্যাশাম, অতীতের উজ্জ্বল ভারত – The Wonder that was India গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ, ২০১১, পৃঃ ৫৪৯) জৈন রামায়ণে সীতাকে রামের বোন বলা হয়েছে।
এতসব ভিন্নতায় সমৃদ্ধ রামায়ণের বৃহত্তর আখ্যান হোমোজেনাইজ করে ফেলেছে সমস্ত ভিন্নতার আনাচ-কানাচ। উচ্চাবচ অঞ্চলগুলো চোখের আড়ালে, চিন্তার আড়ালেই রয়ে যায়। এখানেই টেক্সটের শক্তি, Ur-text-এর শক্তি, শক্তি রাষ্ট্রের। সেকথায় পরে আসছি।
শুধু একটি উদাহরণ দিই। তুলসীদাসের হাতে যখন “শ্রীরামাচরিতমানস” রচিত হচ্ছে তখন রামকে এমনভাবে আমাদের ঘরের ছেলে, দামাল শিশু হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে যে এ রামের পরতে পরতে অন্যকোন স্তর, ভিন্নতর ব্যঞ্জনা থাকতে পারে সেকথা কখনো মাথাতেই আসেনা, যেন আমাদেরই ঘরের ছেলে। বাংলার কৃত্তিবাসী রামায়ণের ক্ষেত্রেও এটা সত্যি। তুলসীদাস লিখছেন –
ভোজন করত বোল জব রাজা।
নহি আবত তজি বাল সমাজা।।
কৌসল্যা জব বোলন জাঈ।
ঠুমুকি ঠুমুকি প্রভু চলহিঁ পরাঈ।।
ধূসর ধুরি ভরে তনু আয়ে।
ভূপতি বিহঁসি গোদ বৈঠায়ে।।
ভোজন করত চপল চিত
                          ইত উত অবসরু পাই।
ভাজি চলে কিলকত মুখ
                           দধি ওদন লপটাই।।
(রাজা যখন রামকে খেতে ডাকেন তখন সঙ্গী ছেলেদের ফেলে সে আসতে চায় না। কৌশল্যা ডাকতে গেলে সে ছেলে থুপ থাপ করে ছুটে পালায়। ধূলায় ধূসর ছেলেকে রাজা হেসে কোলে বসান। চঞ্চল মনে খেতে খেতে একটু অবসর পেলেই খিল খিল করে হেসে সে পালায় – মুখে দইভাত লেপটে থাকে।)
এরকম সব চিত্র যখন আঞ্চলিকভাবে তৈরি হতে থাকে তখন বাল্মীকি রামায়ণের বীর রসের হানি হয়, কিন্তু রামের বীরত্ব ও রাজধর্মকে কেন্দ্র করে রামায়ণ তার সামাজিক চিরস্থায়ী চিত্রকল্প তৈরি করতে থাকে। এখানে সামাজিক মানসিকতা কিভাবে ক্রমাগত ধীরেধীরে গড়ে ওঠে তার একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা রামানুজন দিয়েছেন – “the cultural area in which Ramayanas are endemic has a pool of signifiers (like a gene pool), signifiers that include plots, characters, names, geography, incidents, and relationships. Oral, written, and performance traditions, phrases, proverbs, and even sneers carry allusions to the Rama story. When someone is carrying on, you say, "What's this Ramayana now? Enough." (Three Hundred Ramayanas)
রবীন্দ্রনাথ বলছেন – “রামায়ণ-মহাভারতকে যখন জগতের অন্যান্য কাব্যের সহিত তুলনা করিয়া শ্রেণীবদ্ধ করা হয় নাই তখন তাহাদের নাম ছিল ইতিহাস। এখন বিদেশীয় সাহিত্যভাণ্ডারে যাচাই করিয়া তাহাদের নাম দেওয়া হইয়াছে এপিক' আমরা এপিক শব্দের বাংলা নামকরণ করিয়াছি মহাকাব্য। এখন আমরা রামায়ণ-মহাভারতকে মহাকাব্যই বলিয়া থাকি” (পূর্বোক্ত) রামায়ণ কখনো ইতিহাস, কখনো মহাকাব্য হিসেবে বিবেচিত হছে মনিয়ের-উইলিয়ামসের অভিধানে ইতিহাসের শব্দার্থে অতিকথা, লেজেন্ড এসবও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১৩০৩ বঙ্গাব্দে (১৮৯৬ সাল) রমেশচন্দ্র দত্ত যখন রামায়ণের অনুবাদ প্রকাশ করেন তখন একে “হিন্দুশাস্ত্র”-র গোত্রে ফেলেছিলেন। তাহলে একটা রৈখিক যাত্রা দেখতে পাচ্ছি – শাস্ত্র থেকে ইতিহাস থেকে মহাকাব্য।
শেল্ডন পোলকের পূর্বে উল্লেখিত প্রবন্ধে - “Ramayana and Political Imagination of India” - এই জটিল যাত্রার এবং ইতিহাসের অনুসন্ধান করা হয়েছে নিবিড়ভাবে। তাঁর কাছে প্রশ্ন হিসেবে এসেছে “Ramayana mytheme” কোন পরিস্থিতিতে, কিভাবে এবং কখন “the Ramayana was first deployed as a central organizing trope in the political imagination of India.” খুব সংক্ষেপে বললে একাদশ থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর সময়কাল জুড়ে রামায়ণ পশ্চিম এবং মধ্যভারতবর্ষে public political discourse-এর জগতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। স্মরণে রাখতে হবে এসময় দিয়ে তথাকথিত “বিধর্মী” ম্লেচ্ছদের আক্রমণ ও আগমন শুরু হয়েছে সেসময়ের ভারতে। আল-বিরুনির India গ্রন্থে খুব যত্ন নিয়ে ভারতের অধিবাসীদের সঙ্গে তাঁর মতো বিদেশীদের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে বলছেন যে আমরা যা বিশ্বাস করি এরা তার ঠিক উলটোটা বিশ্বাস করে। “They are not allowed to receive anybody who does not belong to them, even if wished it, or was inclined to their religion.” (Al-Biruni, India, ed. Qeyamuddin Ahmad, 1983, pp. 8-12) এ বিবরণ বোঝায় একাদশ শতাব্দী পরবর্তী সময়ে বা তারও আগের থেকে বিদেশী আগন্তুকদের বিষয়ে ভারতীয়রা খুব অনুকূল দৃষ্টিকোণ বা মনোভাব পোষণ করতনা। পরতে পরতে এ সমস্যা ধরার চেষ্টা করেছেন পোলক একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিক বিবরণ বিশ্লেষণ করে। আগ্রহী পাঠকেরা অবশ্যই প্রবন্ধটি পড়বেন। বিস্তারিত সমস্যাগুলোর একটা সাধারণগ্রাহ্য জবাব দিয়েছেন, প্রশ্ন রেখেছেন পোলক – “If the adoption of the Ramayana to process the events of the eleventh to fourteenth centuries suggests a complex interplay of culture and political power, equally complex is the problem of the present with which I started, the reappropriation of this imaginary in contemporary India.”
এ অনুসন্ধানের জবাব খুঁজতে হলে আমাদের বোধহয় আরেকটু অন্যভাবে ভাবা দরকার। আমরা রাষ্ট্রনামক যে ভূখণ্ডকে ভেবে নিই সেটি আরেকভাবে ভাবলে কল্পনা করে নেওয়া কিছু কমিউনিটির সমষ্টি। একজন বাঙালি প্রকৃত অর্থে একজন মারাঠি বা তামিল বা উত্তর-পূর্বের জনসম্প্রদায়কে চেনেনা। কিন্তু ক্রিকেট বা রামায়ণ নিয়ে ‘গড়ে নেওয়া’ আবেগে তৈরি হয় ভারত নামক দেশটি। সেখানে কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে একইসাথে অরুণাচলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বা যে দলিত যে মানুষটিকে আমরা প্রান্তিক বলে দৈনন্দিন জীবনে তাচ্ছিল্য করি, অথচ জাতীয় সঙ্গীত গাইবার সময়ে তাদের পরিচয় কল্পনা করে নেওয়া হয় ভারতীয় বলে। যদিও এক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে some are more equals than others. এই কল্পিত যাপনের বস্তুগত চেহারা প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে মিডিয়ার শক্তিশালী প্রচার, স্বাস্থ্যঅভিযানের জয়যাত্রা, সেন্সাস সবকিছুর মধ্য দিয়ে ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকে। অ্যান্ডারসন যেমন দেখিয়েছেন (Imagined Communities) এখানে অংকের একটা মজার খেলা চলে। তা’হল একজন নাগরিকের পরিচয় আংকিকভাবে শূণ্য (০) অথবা এক (১)। এক্ষেত্রে ভগ্নাংশের কোন জায়গা নেই। অর্থাৎ, যে আস্তিক সে সম্পূর্ণত নাস্তিকের থেকে পৃথক। ‘ভারতীয়ত্ব’ এবং ‘অভারতীয়ত্ব’-কে একসঙ্গে রাষ্ট্র অনুমোদন করেনা। পরিচয়গুলো আবার নতুন করে নির্ধারিত হয় জাত-জাতি, নিম্নবর্গ-উচ্চবর্গ, হিন্দু-অহিন্দুর মতো বিভিন্ন ক্যাটিগরি দিয়ে।

এরকম এক সন্ধিক্ষণে আমাদের প্রয়োজন পড়ে ঢোঁড়াই-এর।
“তারপর সে গানহী বাওয়ার (গান্ধী) গাওয়া ‘মূরত’ বালা কুমড়োটা মাথায় করে ঢোঁড়াই নিয়ে আসে মিলিট্টি ঠাকুরবাড়িতে। পরনে সেই লাল কাপড়খানা। আগে আগে আসে ঢোঁড়াই আর পিছনে সব তাৎমারা। মহতো পর্যন্ত পিছনে।
ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছে তাদের সব উৎসাহ জল হয়ে যায়। মোহন্তজী বলেন, ‘কী রে ঢোঁড়াই, তোর যে আর দেখাই নেই। যে ঠাকুরবাড়িতে রামসীতার মূরত আছে সেখানে গানহী বাওয়ার ‘মূরত’ রাখা ঠিক নয়। তুলসীদাসজী তাই বলে গিয়েছেন। ---চুথিয়া সরকার!....”
সেসময়ে গান্ধীর মূর্তির সাথে একইসঙ্গে রামসীতার মূর্তি রাখা যায়না। কিন্তু যদি বর্তমান সময়ে রাষ্ট্রনায়কই রামসীতার signifier হয়ে ওঠে? তাহলে? ঢোঁড়াই-এ “বিশেষ” বিশেষণের সরকার তখন ভারতীয় হিন্দু আমজনতার রাজনৈতিক চৈতন্যে রামের metonym হয়ে যেতে পারে। সে নির্মাণই চলছে। এজন্য ইতিহাস, উপকথা, অতিকথা, প্রবাদ ইত্যাদি সবকিছু ঘেঁটেঘুঁটে এক করে দিতে হবে। মার্ক্স বলেছিলেন – “All mythology overcomes and dominates and shapes the forces of nature in the imagination and by the imagination; it therefore vanishes with the advent of real mastery over them.” (Grundrisse, Penguin Books, 1993, p. 110)
সত্যিই কি আজ তাই? মিথোলজির পুনর্নিমাণ সম্ভব সামাজিকভাবে নিত্যনতুন রূপকল্প বা মেটাফর তৈরির মধ্য দিয়ে। নতুন ইমাজিনেশন এবং প্রভুত্ব করবার নতুন techne এবং episteme নির্মিত হচ্ছে। বিপুল পরিশ্রমে, কুট-কৌশলে ও যত্ন নিয়ে নির্মিত হচ্ছে সামাজিক বৈধতা ও অনুমোদন। এর জন্য সামাজিকভাবে অপরিমেয় আর্থিক বিনিয়োগও হচ্ছে।
সাধু সাবধান!




4 comments:

  1. খুব ভালো লাগল।

    ReplyDelete
  2. চমৎকার।
    সময়ের সাথে সাথে রাম এবং রামায়নের চেহারা বদলাচ্ছে।
    দেবতার মূর্তি বন্দী হবে স্বর্ণমন্দিরে, দেবতা কেঁদে বেড়াবেন রাস্তায়।

    ReplyDelete
  3. ভক্তিভূষণ মন্ডলAugust 6, 2020 at 2:16 AM

    আপনার লেখাটি বাস্তবনির্ভর, যুক্তিনির্ভর ও তথ‍্য বহুল। এটাও ঠিক যে রামায়ণে বর্নিত অস্পৃশ‍্যতা, নীতিহীন যুদ্ধ, নারীর প্রতি অমর্যাদা ইত্যাদি বহু বিষয়ে সাধারণ মানুষ অজ্ঞাত।
    রামায়ণের কাহিনী এতই আবেগপ্রবণ এবং তার বর্ননা ভঙ্গি ও লেখার ভঙ্গি এতই সহজ ও সরল তা সাধারণ মানুষকে ,যারা হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর মস্তিষ্কের আরাম চায় কোন ধরনের যুক্তি প্রয়োগ চায় না, অতি সহজেই আকৃষ্ট করে এবং রামকে ঐতিহাসিক পুরুষ বলে মনে করে। এই সুযোগ টাই গ্রহণ করে চরম দক্ষিণ পন্থী দল। এটিকে অবলম্বন করে ফ‍্যাসিবাদ/আধা ফ‍্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে।
    গতকাল দেশের প্রধান শাসকের মুখ থেকে শোনা গেল পৃথিবীর বহু দেশে বিভিন্ন ভাষায় ,বিভিন্ন ধর্মে, বিভিন্ন ভাবে রামায়ণ বর্নিত আছে। শাসকের মতে এটা প্রমাণ করে যে "রাম" নাম পৃথিবীর সকল মানুষের মনের মধ্যে বিদ‍্যমান। অতএব রাম পুরুষত্তোম,বাস্তব সত্য ও ভারতের সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে বর্তমান সরকার ভারতের প্রকৃত স্বাধীনতা আনয়ন করলো।
    আমার প্রশ্ন এরকম অবস্থা সৃষ্টি হলো কি ভাবে। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতবর্ষে এ ধরনের কথা বলার সাহস আসে কি ভাবে?
    ভারতবর্ষে কি যুক্তিবাদী মানুষ নেই? ভারতের বুদ্ধিজীবী রা ঘুমিয়ে কেন? কতিপয় ছাড়া সকল বুদ্ধিজীবী চুপচাপ কেন?
    এই সব বিষয় নিয়ে আপনার যুক্তি নির্ভর ও তথ্য নির্ভর আলোচনা শোনার অপেক্ষায় রইলাম।

    ReplyDelete

দেবমাল্য চক্রবর্তী

মা নিষাদ   ‘শয়তান, তুই নরকে যাবি পাপ-পুণ্যের জ্ঞান নেই তোর, শয়তান, তুই নির্ঘাৎ নরকে যাবি অভিশাপ দিচ্ছি তোকে, তুই নরকে যাবি’ দস্য...

ক্লিক করুন। পড়ান।