Friday, May 4, 2018

শ্রীজাতা গুপ্ত






ফড়িং


এ পাড়ায় ভুল ক'রে আসা
জাফরানি শীত আর কাঠবাদাম নীল আস্তাবল
এতসব নিছক প্রত্যাশা
দস্তানা একপাটি। ভল্লুক, প্রজাপতি-ক্লিপ
প্রিন্সেস জুতোজোড়া,
গিঁটবাঁধা চিঠি পথে ফেলে
এখনি রওনা দেবে ওরা।
পায়ে পায়ে অতিরিক্ত ছাপ
কান পেতে অসময়ে বরফ শোনে
মিছিল। ইস্তফা। প্রতিবাদ।
বেহিসাবে আসা এই পথে
শেষ ট্রেন এইবার উড়বে আকাশ
পৌঁছিয়ে দেবে ঠিক
কোনও অন্য সজীব সৌরজগতে

শান্ত হয়েছে পথ
একাদশী দ্বাদশীর রাত
একে একে নিভেছে মঞ্চে সার্বজনীন উৎসব
সবশেষে টিকালো নাসিকা ডোবে জলে
ভোরের নরম পূর্বাভাসে
মনে রেখো
পলিমাটি থিতু হ'য়ে এলে
উঠোনের কাছে ঠিক একদিন কাঠামো ভেসে আসে

খোঁজা হল, যা লিখেছে খবরের কাগজে? আরও গ্রাম, অন্য শহরে?
কতগুলো ভুল ধরা বাকি? সকলের মুখ ফেলে আমার এই মুখ ছাপালো কি?
আর কত নাম? কার কার?
যুদ্ধকালীন নীতি এসব পরীক্ষার।
'আমি' থেকে বারিয়ে যে মাটি থেকে সহজকে জানা
মুখ ভারি হয়ে আসে যুক্তিতে
প্রত্যুত্তরে,
নিভৃত হাঁটার ছলে চাওয়া থেকে পাওয়া
যে প্রশ্ন করাই হয়নি, তাকে কেন দিনে দিনে এত
অভিনব প্রতিবাদে
ক্রমশ জটিল ভেবে নেওয়া?

ওরা হয়ত ঠিক বলছে, জানো
মস্তিষ্ক বিকল হয়েছে নাকি
বুদ্ধি, তাও ছিলনা কোনওকালে
এতদিনে বিপর্যস্ত বোধ-ও
সহ্যশক্তি, তাও বুঝি সব গেল
এত কথা কানে আসছে, তার
অর্থ তবু মনে পড়ছে না তো!
নিজে যা'ই বলব ব'লে ভাবি
শূন্য হাত শব্দ ছেড়ে যায়
ওরা হয়ত বলছিল সব ঠিকই
মুখের ভাষাও ক্ষমতা হারায়

আসলে,
লড়াই সকলের একার
বহুগামী ভাষা। মাইলস্টোন পেরোলেই ডায়ালেক্ট চিনে চলা যায়।
গুরুত্ব অনুযায়ী পরিচিতি বাড়ে এলাকার
শব্দের ক্ষয় আর নির্বাক ইশারার জয়
যুদ্ধের অভিধানে বর্ণানুক্রমিক উত্তাপ
বেঁচে ছিল যারা,
দেয়ালে দেয়ালে সেই ছোট বড়
আঙুলের ছাপ।
লড়াই, বরাবর, সকলের ফসলের পাপ।

সকালে বরফ পড়ে। দূরে।
পাহাড়িয়া গাল বেয়ে স্কিয়িং-ট্র‍্যাক বলিরেখা
খবরের হুশহাশ যাওয়া আর আসা
সারাদিন শোক সংবাদ।
যোজন পেরিয়ে পরে খোঁজ করি
প্রতিবেশিনীর অকালমৃত সন্তান
তরতাজা বদমেজাজ, শাড়ির ভাঁজ,
ঘর। বিচ্ছেদ। সংসার।
পুরাতন পতঙ্গ অবসাদ।
চোখে কোনও ছায়াও সরে না তার
কপালে বয়স নামে। অবজ্ঞা
প্রমাদ।
বেলাশেষে ফড়িং-এর ঘুম নিয়ে শিমুলের ছেঁড়া তুলো
গায়ে এসে থামে
পালিয়ে বাঁচার দেশ বেসমেন্ট সুরঙ্গ বিষাদ

আগামীর প্রয়োজন ভেবে
আলগোছে টেবিলের পাশে
চকমকি পাথর ফেলে রাখা
আগামীর প্রয়োজন,
ভেবে
একফালি রোদ্দুর গায়ে সেঁকে
প্রস্তুতি নিতে থাকে ঘুমন্ত বহ্নিশিখা


No comments:

Post a Comment

দেবমাল্য চক্রবর্তী

মা নিষাদ   ‘শয়তান, তুই নরকে যাবি পাপ-পুণ্যের জ্ঞান নেই তোর, শয়তান, তুই নির্ঘাৎ নরকে যাবি অভিশাপ দিচ্ছি তোকে, তুই নরকে যাবি’ দস্য...

ক্লিক করুন। পড়ান।